গুঁড়া মশলা তৈরি ও প্যাকেটজাতকরণ ব্যাবসা

 জীবন ও জীবিকার তাগিদে মানুষ বিভিন্ন ধরণের আয় উপার্জনমূলক কাজের সাথে জড়িত। এর মধ্যে গুঁড়া মসলার ব্যবসা অন্যতম। উন্নত উপায়ে বিভিন্ন রকমের মসলা গুঁড়া করে বাজারজাত করতে পারলে লাভবান হওয়া সম্ভব। রান্নার কাজটি দ্রুত ও ঝামেলাহীন ভাবে শেষ করার জন্য বর্তমানে বাটা মসলার জায়গায় গুঁড়া মসলার ব্যবহার বাড়ছে। এর মধ্যে   জিরা, ধনিয়া, হলুদ, মরিচ, গরম মসলা ইত্যাদি অন্যতম।

  •  বাজার সম্ভাবনা 
  •  মূলধন 
  •  প্রয়োজনীয় উপকরণ, পরিমাণ, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান 
  •  গুঁড়া মসলা তৈরি ও প্যাকেটজাতকরণের নিয়ম 
  •  আনুমানিক আয় ও লাভের পরিমাণ 
  •  সচরাচর জিজ্ঞাসা
               Gura masla7.JPG
             ছবি: গুঁড়া মসলা

 

বাজার সম্ভাবনা 

বর্তমানে গুঁড়া মসলার চাহিদা আগের তুলনায় বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাইকারি দরে বিভিন্ন রকমের মসলা কিনে পরিষ্কার পরিছন্নভাবে গুঁড়া করে উন্নত উপায়ে প্যাকেট করে বাজারজাত করতে পারলে লাভবান হওয়া সম্ভব। এছাড়া মসলার মান ভালো হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যেতে পারে। গুঁড়া মসলা তৈরির পর বিভিন্ন উপায়ে সেগুলো বাজারজাত করা যায়। যেমন :

  1. মুদি দোকানে সরবরাহ করা যেতে পারে।
  2. অনেক সময় ক্রেতা বাড়িতে এসেই কিনে নিয়ে যেতে পারে।
  3. নিজের তৈরি পণ্যের প্রচার চালানোর জন্য প্রথমে প্রতিবেশীদেরকে জানানো যেতে পারে, স্থানীয় দোকানীর সাথে যোগাযোগ করা যায়। আবার পণ্যের বর্ণনা করে লিফলেট তৈরি করেও বিলি করা যেতে পারে।

 

মূলধন 

আনুমানিক ৭০০০-৮০০০ টাকা মূলধন নিয়ে গুঁড়া মসলার ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। বড় আকারে মসলার ব্যবসা শুরু করতে নিজের কাছে যদি প্রয়োজনীয় পুঁজি না থাকে তবে ঋণ দানকারী ব্যাংক বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান (এনজিও) থেকে শর্ত সাপেক্ষে স্বল্প সুদে ঋণ নেয়া যেতে পারে।
বিস্তারিত পড়ুন

মানিব্যাগ তৈরির কারখানা

মানিব্যাগ তৈরির কারখানা দিতে চাইলে খুব বেশি পুঁজির প্রয়োজন হয় না। আর প্রশিক্ষণের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন নিজ এলাকার বিসিক অফিসে। এ ছাড়া জিঞ্জিরা, নাখালপাড়া, কামরাঙ্গীরচর, রায়েরবাজার, কোনাপাড়া, যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদের বাদল সরদারের গলিতে আছে বেশ কিছু কারখানা। চাইলে সেখানে যোগাযোগ করে দেখে নিতে পারেন তৈরির পদ্ধতিও। তৈরির পদ্ধতি খুব বেশি ঝামেলার না হওয়ায় দু-তিন দিন দেখে নিলেই হবে।

যেভাবে শুরু করবেন: – পুঁজি কম হলে নিজে এবং বেশি হলে কর্মচারী নিয়ে শুরু করতে পারেন। এর জন্য ১০-১২ বর্গফুটের ঘর হলেই চলবে।কাঁচামালের খোঁজে যেতে হবে ঢাকার হাজারীবাগ, বংশাল ও সিদ্দিকবাজারে। এসব জায়গা থেকে চামড়াসহ অন্য সব কিছুই পাবেন।

মানিব্যাগের কারখানা করতে কী কী লাগবে: – একটা চামড়া বা রেকসিন সেলাই উপযোগী মেশিন। আর লাগবে একটা প্রেশার ডাইস মেশিন। টেবিল বা পিঁড়ি, কাটিং ছুরি, কাঁচি, লাঠি, হাতুড়ি এসব যন্ত্রপাতি হলেই চলবে। আর কাঁচামালের মধ্যে লাগবে চামড়া, রেকসিন, রানার, জিপার, সুতা, পেস্টিং সলিউশন, আস্তর, বোতাম, কাপড়, নেট, পেপার ও সেলুলয়েড পেপার।

কিভাবে বানায়: – চামড়া কিংবা রেকসিনকে মানিব্যাগের মাপে কাটতে হয়। রেকসিন হলে ভেতরে কাগজ দেওয়া হয়। আর চামড়া হলে এগুলোকে মাপমতো কাটা হয়। এরপর ব্যাগের ওপরের অংশে গরম ডাইসের চাপ দিয়ে বিভিন্ন নামাঙ্কিত ছাপ দেওয়া হয়। ছবি রাখার জন্য পকেটে সেলুলয়েড পেপার দেওয়া হয়। সেলাই মেশিন দিয়ে সেলাইয়ের পর দুই পাশ থেকে টেনে টিপ বোতাম লাগানো হয়। হাতুড়ি দিয়ে বোতাম লাগানো হয়। এ ছাড়া রেকসিন ও চামড়া অথবা কাগজের সঙ্গে জোড়া লাগাতেও আঠা ব্যবহার করা হয়।

কাঁচামালের দাম কেমন: – মানিব্যাগ বানাতে সাধারণত ছোটখাটো ও টোটা-ছেঁড়া চামড়া ব্যবহার করা হয়। এগুলোর দামও কম। গরু বা ছাগলের মাথা বা পায়ের দিকের ছোট চামড়াগুলো ২০ থেকে ৩০ টাকা পিস হিসেবে কিনতে পাওয়া যায়। আর ফুট হিসেবে কিনলে পাঁচ থেকে ১০ টাকা ফুট দরে কেনা যাবে। রেকসিনের মানিব্যাগ বানাতে রেকসিন কিনতে পারেন বংশাল থেকে। সোয়া এক গজের রেকসিনের দাম পড়বে ৭০০ টাকা। জিপার কিনতে হবে দুই থেকে আড়াই টাকা গজ দরে। জিপারের রানার পড়বে প্রতিটি ৪৫ পয়সা থেকে শুরু করে এক টাকার মধ্যে। সুতা ৩০ টাকা এক রিল, পেস্টিং সলিউশন তিন লিটারের বোতল ৭০০ টাকা। আস্তর বা পলিশ নিজেই বানিয়ে নিতে হবে। বোতাম এক গ্রুস বা ১৪৪ পিস ১৫০ টাকা। চাইলে পুরনো কাপড় কাজে লাগাতে পারেন, আবার নতুন পলিয়েস্টার কাপড়ও কিনে নিতে পারেন, দাম পড়বে আট থেকে ১০ টাকা গজ। একটা পেপারশিট পড়বে ১০ টাকা। আর নেট পড়বে চার টাকা গজ। সেলুলয়েড পেপার সংগ্রহ করা যাবে সিদ্দিকবাজার থেকে। প্রতিটি পাঁচ টাকা করে। সেলাই মেশিনের দাম পড়বে সাত-আট হাজার টাকা। ডাইস মেশিন ২০ হাজার টাকা। আপনার ডিজাইন ও চাহিদামতো প্রতিবারের ডাইস বানাতে পড়বে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা।

কোথায় কী পাওয়া যাবে: – চামড়া কিনতে পারবেন সিদ্দিকবাজার, বংশাল রোড, নাজিমউদ্দিন রোড এবং হাজারীবাগ থেকে। নাজিমউদ্দিন রোড বা বংশাল ঘুরে একটি পুরনো সেলাই মেশিন কিনে নিতে পারেন। তবে নতুন আর পুরনোতে দামের পার্থক্য খুবই কম। তাই নতুনটাই কিনে ফেলুন। প্রেশার ডাইস মেশিন কিনতে পারেন জিঞ্জিরা কিংবা লালবাগ অথবা সিদ্দিকবাজার থেকে।টেবিল বা পিঁড়ি বানিয়ে নিতে পারেন বাড়ির পাশের কাঠমিস্ত্রির কাছ থেকে। কাটিং ছুরি, কাঁচি কিনতে পারেন চকবাজার অথবা শাহজাহানপুর থেকে।হাতুড়ি কিনতে যেতে পারেন নবাবপুর অথবা ঠাটারীবাজার। কারওয়ান বাজারেও অনেক কামারের হাতুড়ি ও কাঁচির দোকান আছে।প্রয়োজনীয় কাঁচামাল লাগবে চামড়া, রেকসিন, রানার, জিপার, সুতা, পেস্টিং সলিউশন, আস্তর, বোতাম, কাপড়, নেট, পেপার ও সেলুলয়েড পেপার। এগুলো একই দোকান থেকে কেনা যাবে। এর জন্য যেতে হবে ঢাকার সিদ্দিকবাজার অথবা বংশালে।

কাজ কেমন পাওয়া যায় বা আয় কেমনসব মিলিয়ে একটা খাঁটি চামড়ার মানিব্যাগ তৈরিতে খরচ পড়ে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। বিক্রি করা যায় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। রেকসিনে বানানো মানিব্যাগগুলো তৈরিতে খরচ পড়ে ২০ থেকে ৫০ টাকা। বিক্রি করা যায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। সব মিলিয়ে দুজন কর্মচারীসহ সব খরচ মিটিয়ে মাসে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।